সবাই খালি ডায়ালগ মারে “এটাই সাইন্স”!
সাইন্স দিয়া জীবনকে ও নানা কিছুকে বুঝতে চায়।
আমার মতে পড়াশোনার আসল মর্ম ও মজাটাই হলো তা দিয়ে যদি আপনি আপনার জীবন ও চারপাশকে ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হন,তার মানে আপনি সংশ্লিষ্ট জ্ঞান-শাখার শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন,যেটা শুধু মুখস্থ করেও করা যায়।আপনি যে বিভাগেই পড়ুন না কেন,সেটি আপনার কাছে আয়না/চোখ স্বরুপ,যে আয়নায়/চোখে আপনি সব কিছু ওই শাখার বিদ্যা দিয়ে বিচার করতে পারবেন।লেখায় আমাকে শিল্পাগ্রহী মনে হলেও,এটাই বাস্তবতা!
আমি কমার্সের ছাত্র।তাই আমি জীবনের ঘটনাগুলোকে সাইন্সওয়ালদের মত করে বলতে পারি,এটাই কমার্স!
আমার জ্ঞান কমার্স দিয়েই আমি জীবনকে ব্যাখা করার যোগ্যতা থাকতে হবে,নতুবা বুঝবো আমি পুস্তিকা সর্বস্ব পড়াশোনা করেছি।এই চিন্তা থেকেই একটা লেখার সিরিজ আনবো ভাবছি।নাম হবে “কমার্স দিয়ে জীবন দেখা”!
আশা করি কমার্সের ছাত্ররা নিয়মিত পড়বেন ও আপনাদের জ্ঞান দিয়েও একেকটি বিষয় অবতারনা করবেন বা মন্তব্য করবেন।
আজকে আমরা জীবনকে দেখবো হিসাববিজ্ঞানের চোখেঃ
১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দে লুকা প্যাসিওলি নামে একজন ইটালীয় গনিতবিদ হিসাব রক্ষণের মূল নীতি “দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি (Double Entry System)”ব্যাখ্যা করেন।লুকা প্যাসিওলি ছিলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র একজন নিকটতম বন্ধু ও গৃহশিক্ষক এবং ইতালীয় নাবিক ক্রিস্টোফার কলম্বাস এর সমসাময়িক। লুকা প্যাসিওলির ১৪৯৪ সালের মূলপাঠ ল্যাটিন ভাষায় (ট্রেক্সট্) (summa de Arithmatica Geometria,proportionet proportionalita) সুম্মা ডি এরিথিমেটিকা, জিওমেট্রিকা, প্রপোরসোনিয়েট, প্রোপোরসনালিটাতে এই প্যাসিওলি বর্ণনা করেছিলেন দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি যেটা নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক তথ্য রেকর্ড করা হয় দক্ষতার সাথে এবং যথাযথভাবে। লুকা প্যাসিওলির স্বর্ণসূত্র দ্বারা খুব সহজেই সম্পদ, দায়, আয়, ব্যয় এর ডেবিট-ক্রেডিটের মাধ্যমে মেলানো যায়।এই গেলো তত্ত্ব,এবার আসি জীবনকে ব্যাখ্যায়!
কিছু মানুষ দুনিয়ায় শুধু দিতেই আসে। আর যারা তাকে দিবে,তারা প্রাপ্তির হিসাব কষতেই সময় পার করে ফেলে।
আর, এই রকম মানুষের যাত্রা থাকে অনন্ত মরুভূমির পানে।তার গলা শুকিয়ে আসে ঠিকই, কিন্তু পাশের সহযাত্রীদের যাত্রা আরো সুগম করতে দাঁতে দাঁত কামড়িয়ে সামনে চলে।এরা হয়তো এভাবেই মারা পড়বে নিজের শুন্য পানির পাত্রটি নিয়েই;কিন্তু সহযাত্রীরা মনে করবে এটা তার স্বাভাবিক মৃত্যু!
অথচ এই মৃত্যুতে যে সহযাত্রীদের দায় আছে তা তারা বুঝবেই না, কারণ দায়ের হিসেব কষাটাও যে তাদের শিখিয়ে যায়নি ঐ হতভাগাটা!
আর, হ্যাঁ, ঐ দায়টাও তারই!
দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি নিজে ঠিকই শিখেছে, কিন্তু আশেপাশের মানুষকে হিসাববিজ্ঞানের বইটি পড়তে দেয়ার সময় ঐ অধ্যায়টিই ছিঁড়ে ফেলেছে।আর, স্বাভাবিকভাবেই তারা শুধু ‘এক তরফা দাখিলা পদ্ধতি’র পাঠটিই পড়েছে!তারা টেরও পেল না যে, হিসাব বিজ্ঞানের কত বড় একটি অধ্যায় তারা মিস করলো!!আর,যদিও কারো’র ‘খতিয়ান’এর গরমিল হয়,তাহলে ‘রেওমিল’-এ সে অনিশ্চিত হিসাব দিয়ে তা ঠিকই তার নিজ হিসাবটা মিলিয়ে নেয়।আর,’চূড়ান্ত হিসাব’ এর কথা তো এই ধরনের মানুষ চিন্তাই করে না,মিলবে না জেনেও!
হু কেয়ার্স? লাইভস আর মুভস অন!
আর হ্যাঁ, এটাই কমার্স!!