মালদ্বীপ আমাদের খুব কাছের একটা দেশ।এটি মূলত ভারত মহাসাগরের ছোট্ট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র।এক হাজার দুই শ’রও বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ।
আর আপনি জানেন কি বর্তমানে মালদ্বীপে প্রতি ৩ জন মানুষের একজন বাংলাদেশের? না ওরা নাগরিকত্ব দেয় না, এখন মালদ্বীপে যত মানুষ আছে তার ১/৩ বাংলাদেশের! মানের ওদের জনসংখ্যা এখন মাত্র ৩ লাখ আর বাংলাদেশের মানুষ ওখানে প্রায় দেড় লাখ! বাংলাদেশের মানুষ জীবিকার তাগিদে ওখানে থাকে!
এবার একটু অর্থনৈতিক তুলনামূলক আলোচনায় যাই।
মালদ্বীপের মাথাপিছু আয় ৯,১২৬ ডলার! আর বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২,৩২৬ ডলার! মালদ্বীপীয় রুপি ওদের মূদ্রার নাম! ওদের এক রুপি বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ৭ টাকার মতো!
এখানে আমার বিশ্ববিদয়ালয়ে মালদ্বীপের দুইজনের সাথে ভালো বন্ধুত্ব আছে,ওদের সাথে প্রায়ই গল্প হয়।সেইদিন ওদের দুইজনের সাথে ট্রেনে ডর্মে ফিরছি, গল্পে গল্পে ওরাই এইসব জানালো! এও জানালো,ওখানে বাংলাদেশীদের দুরবস্থার কথাও,কত কষ্ট করে বাংলাদেশীরা ওখানে দিন পার করে,আয় করে! তারা বললো, মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা মালে’তে নয় ঢাকায় আছি, এত বাংলাদেশী চারিপাশে! ওরা দুইজনের এখানে মাস্টার্সে স্কলারশিপে আছে।ওদের ব্যাচেলর করেছে আজারবাইজান থেকে,আরেকজন মালে থেকেই!
আপনি জানেন কি মালদ্বীপের শিক্ষার পুরো দুনিয়ার সবচেয়ে বেশিদের কাতারে একটি। এশিয়ায় সর্বোচ্চ ৯৯.৩ শতাংশ!
মালদ্বীপের ২ টি ইউনিভার্সিটি। দেশটির প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়- The Maldives National University প্রতিষ্ঠা পায় ১৫ই ফেব্রুয়ারী, ২০১১ সালে! এটি মূলত ১৯৭৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ভোকেশনাল কলেজ ভিত্তিক পড়াশোনা ছিলো বিভিন্ন নামে! শেষমেশ ওরা ২০১১ সালে এটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নতি করছে। আবার পড়ুন, ১৯৭৩ সাল থেকে একটা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নামে শিক্ষার নানা ধাপ উতরিয়ে এসে ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নতি হয়েছে। আর ওদের প্রথম পিএইচডি স্টুডেন্ট গ্রাজুয়েট হয় ২০১৮ সালে!
আর দ্বিতীয়টি ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ মালদ্বীপ প্রতিষ্ঠা পায় ২০১৫ সালে! যেটিও পূর্বতন কলেজ ছিলো।বলে রাখা ভালো এটি অনেকটা ইসলামি বিষয়ে বিশেষায়িত ইউনিভার্সিটি! এর এই বিশ্ববিদ্যালয় মূলত ১১ টি মাস্টার্স ও দুটি বিভাগে পিএইচডি চালু করেছে।
আর আমাদের দেশ প্রতি জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে পান দোকানের মতো! অথচ এই দোকানগুলোও রাতারাতি পিএইচডি (!) ডিগ্রির কারখানাও বনে যায়! আমি পিএইচডি করতে আসছি দেশের বাইরে সম্প্রতি, এখানকার রিসার্চ ডিগ্রির কালচার দেখে হতবাক হয়েছে।বলে রাখা ভালো দেশে এক দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছি,তাই রিসার্চ ডিগ্রি সম্পর্কে আমি কিছুটা হলেও ওয়াকিবহাল!
কথায় কথায় এমফিল,পিএইচডি ডিগ্রি খুলে ফেলা ফাজলামো ছাড়া আর কিছুই না।আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখেছি,আর বাড়িয়ে বললে চ্যালেঞ্জ নিতে পারি যে এগুলো হচ্ছে প্রমোশনের জন্য ভাগাড় (ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে,তাই গায়ে মাখবেন না,মোটাদাগে আমার এই স্টেটমেন্ট এর বিপক্ষে জাবেই না বলে বোধ করি!)
এখন সংবাদ শিরোনাম দেখছি বিশ্ববিদ্যালয় পাস বেকার,কিছুদিন পর দেখবো পিএইচডি পাস বেকার! আর উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আগামীবছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে শান্তিতে নোবেলের আবেদন আগাম জানিয়ে রাখছি! আর জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় মডেলের জন্য নতুন কোন পুরস্কার প্রস্তাব করছি দুনিয়ায়! বলে রাখা ভালো প্রাইভেট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলে প্রায় অনেক জেলাতেই ৩/৪ টা করে গড়ে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েই গেছে! তাই জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে কন্সেপ্টটি বাস্তবায়িত হয়েই গেছে,আলহামদুলিল্লাহ!!
#StopDoinghunkypunkywithoureducation